রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ২:১৭

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
চিকিৎসক সঙ্কটে শেবাচিমে অচলাবস্থায় পরে রয়েছে কিডনি চিকিৎসার যন্ত্রপাতি

চিকিৎসক সঙ্কটে শেবাচিমে অচলাবস্থায় পরে রয়েছে কিডনি চিকিৎসার যন্ত্রপাতি

dynamic-sidebar

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি কিডনি রোগীদের জন্য ইউরোলোজি ও নেফ্রোলজি বিভাগ থাকলেও পৃথক কোনো ওয়ার্ড নেই। এ দুই বিভাগে রয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। রোগীদের চিকিৎসার জন্য আনা যন্ত্রাংশগুলো পরে আছে অচলাবস্থায়। ফলে কিডনি রোগের চিকিৎসায় সরকারী এই প্রতিষ্ঠানে কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যাচ্ছেনা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে এ হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য ইউরোলোজি ও নেফ্রোলজি বিভাগ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরপর থেকে উদ্যোগ বাস্তবায়নে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ২০০৮ সালের ১৯ মার্চ ফের এ হাসপাতালে কিডনি রোগীদের চিকিৎসার জন্য দুইটি হিমো ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি ডিজিটাল রেডিওলজি (ডিআর) মেশিন, একটি পানি শোধন মেশিনসহ (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের তৃতীয় তলায় কিডনি বিভাগে দুটি ডায়ালাইসিস মেশিন, ডিজিটাল রেডিওলজি মেশিন ও পানি শোধন মেশিন স্থাপনের কাজ শুরু হলেও সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে স্থাপন না করেই কারিগরি দলটি চলে যায়। এরপর ২০১৬ সালে হিমো ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো ফের চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন কারিগরি ব্যবস্থাপকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল গত ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বরিশালে আসেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পরে থাকা যন্ত্রপাতি সচল করার বিষয়টি খতিয়ে দেখেন এবং এসব চালু করতে যেসব বাড়তি যন্ত্রাংশ প্রয়োজন তার একটা তালিকা করে ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরে যান। তখন তারা ১৫ দিনের মধ্যে এসব যন্ত্রপাতি মেরামত করে বিভাগটি চালু করার আশ্বাস দিলেও এখনও যন্ত্রপাতিগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পরে রয়েছে।

অতিসম্প্রতি দীর্ঘদিন পর ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো ফের চালুর উদ্যোগ নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত রবিবার স্থানীয় একজন টেকনিশয়ানকে দিয়ে হিমো ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি ডিজিটাল রেডিওলজি (ডিআর) মেশিন, একটি পানি শোধন মেশিনসহ (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলো দেখানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই টেকনিশয়ান জানান, দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পরে থেকে যন্ত্রপাতির কিছু যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে পরেছে। সচল করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর এ ব্যয়ের কথা শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে আবার ভাঁটা পরেছে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী কাওসার হোসেন জানান, তার বাবা মোঃ ইউনুস খান দীর্ঘদিন কিডনি রোগে ভুগে গত ২ ফেব্রুয়ারী ইন্তেকাল করেছেন। কাওসার হোসন বলেন, বিভাগীয় শহর হলেও বরিশালে কিডনি রোগীদের জন্য সে ধরনের কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাই রোগীকে ঢাকা নেয়া ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব নয়। এখানে দুইটি বেসরকারী ডায়ালাইসিস সেন্টার থাকলেও সেখানে গলাকাটা দাম রাখা হয়।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলোজি বিভাগের প্রধান শরীফ শাহ জামাল জানান, ইউরোলোজি বিভাগ থাকলেও স্থান সঙ্কটের কারণে পৃথক কোনো ওয়ার্ড নেই। সার্জারি বিভাগে স্বল্প পরিসরে কয়েকটি বেডে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। বহিঃর্বিভাগে সপ্তাহে দুইদিন কিডনি রোগী দেখা হয়। ওই দুই দিনে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী আসে কিন্তু ভর্তি হতে পারে পাঁচ থেকে ১০ জন। এ ছাড়া ইউরোলোজি বিভাগটি চলছে মাত্র চারজন চিকিৎসক দিয়ে। নার্সসহ জনবল সঙ্কট রয়েছে। এসব কারণে কিডনি রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডাঃ মানবেন্দ্র দাস জানান, মাস দেড়েক পূর্বে নেফ্রোলজি বিভাগে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যোগদান করে তিনি দেখতে পান দুইটি হিমো ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি ডিজিটাল রেডিওলজি (ডিআর) মেশিন, একটি পানি শোধন মেশিনসহ (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পরে রয়েছে। স্থাপন করা হয়নি। ডায়ালাইসিস মেশিন সচল না থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। বিষয়টি হাসপাতাল পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

সহকারী রেজিস্ট্রার ডাঃ মানবেন্দ্র দাস বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন কিডনি রোগী আসেন। বেশিরভাগ রোগীরই ডায়ালাইসিস প্রয়োজন। তাদেরকে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে বলা হয়। এখন অনেক ছোট হাসপাতালে অধিকমূল্য নিয়ে ডায়ালাইসিস করা হয়। দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এই সরকারী চিকিৎসা কেন্দ্রে দীর্ঘদিন থেকে হিমো ডায়ালাইসিস মেশিন অচল থাকাটা দুঃখজনক বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এসএম বাকির হোসেন জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা কারিগরি বিভাগ থেকে লোক পাঠিয়ে মেশিনগুলো সচল করবেন, নতুবা টেকনিশিয়ান দিয়ে মেরামতের অর্থ বরাদ্দ দিবেন। তবে এসবই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net